শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:১১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না ও বন্ধু..’উপমহাদেশের কিংবদন্তী গায়ক ভূপেন হাজারিকার এ কালজয়ী গানটি মনে পরে গেল যখন দেখলাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে দেশব্যাপী কর্মহীন ঘরবন্দি শ্রমজীবী মানুষ, দরিদ্র ও দুঃস্থদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাহায্য করছে কয়েকজন তরুণ।
মনে হচ্ছিল মানুষের প্রতি মানুষের হৃদয়টাকে স্ফিত করে মানবিকতাকে জাগিয়ে তুলতেই যেন গানটি গেয়েছিলেন উপমহাদেশের কিংবদন্তী এ গায়ক। ক্ষুধার্ত ও হতদরিদ্র মানুষদের মুখে দু’মুঠো খাবার তুলে দেওয়ার অনন্ত চেষ্টার খন্ড দৃশ্যগুলো যখন আমার চোখের সামনে। মহামারীতে রূপ নেওয়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি এ যেন মানবতার পরেও লড়াই। মানবিকতাবোধ জাগ্রত হয়েছে তাদের মধ্যে। মানবিকতাবোধে বরিশাল নগরীর জিয়া সড়ক এলাকা এবং নগরীর বিভিন্ন স্থানের কিছু যুব সমাজের উদ্যোগে চলছে কর্মহীন গরিব ও দুঃস্থদের বাঁচিয়ে রাখতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিত্যপণ্য বিতরণ। জাতির চরম সংকটময় মূহুর্তের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন কয়েজন তরুন আর হয়ে উঠেছেন মানবতার ফেরিওয়ালা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর কিছু যুবসমাজ সম্প্রিতি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রথম থেকে সাধারন মানুষকে সতর্ক করতে মাঠে নেমেছেন তারা।আর যখন করোনা ভাইরাস মহামারীতে রূপ নিয়েছে হয়ে উঠেছে প্রাণঘাতী ঠিক তখনি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি তারা হয়ে উঠেছেন মানবতার ফেরিওয়ালা। আর মানবতার ফেরিওয়ালা হয়েই কর্মহীন গরিব ও দুস্থদের বাঁচিয়ে রাখতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল, ডাল, আলু, পেয়াজ ,সাবান,তেল ও কালিজিরাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিতরণ করছে তারা। এ যেন তাদের মানবতার পরেও লড়াই।
জিয়া সড়ক এলাকার যুব সমাজের কোন কমিটি নেই। এরা নিজেদের উদ্যোক্তা মনে করেই স্বেচ্ছায় সাধারন মানুষের পাশে থাকার চেস্টা করেন। তবে তারা সবাই প্রচার বিমূখ। এই উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন,শাকিল,জসিম,মনির,মোকসেদ,রুবেল,হাবিব,সালাম,রায়হান,রানা,এইচ এম হেলাল,মজিবর রহমান নাহিদ,সজল,শাকিল,খলিল,মাসুদ,সৈকত,রেদোয়ান,রাজু,সাদ্দাম,মেহেদী হাসান রাতুল,আদনান অলি,এইচ আর হীরাসহ আরও অনেকে।
এমনি একজন উদ্যোক্তা শাকিল জানান, আমরা চেষ্টা করেছি চলমান এই সংকটের মধ্যে ক্ষুর্ধাত মানুষের পাশে দাড়ানোর। এই কার্যক্রমকে সাগত জানিয়ে অনেকেই আমাদের পাশে এসে দাড়িয়েছেন। এজন্য আমরা তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। কেননা তারা কোন লাভের কথা না ভেবেই আমাদের সাথে একাত্বতা পোষণ করেছেন এবং নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকেই এসেছেন আমাদের সাথে কাজ করতে। চলমান পরিস্থিতিতে এই কার্যক্রমকে আরো সম্প্রসারণ করার জন্য মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে হলেও চলমান সংকটে ক্ষধার্ত মানুষের পাশে সকলকে দাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
অন্য আর একজন উদ্যোক্তা এইচ আর হীরা জানান, ক্ষুধার জ্বালা কেবল ক্ষুর্ধাতরাই জানে। সেই জায়গা থেকেই ছোট্ট পরিসরে শুরু করেছি।প্রথমে এলাকার বড় ভাইয়েরা উদ্যোগ নিয়েছে পরবর্তীতে তাদের পাশাপাশি আমরা ছোটরাও উৎসাহিত হয়েছি।আমরা বন্ধুরা সকলে মিলে প্রথম ধাপে কিছু সংখ্যক অসহায় মানুষের পাশে দাড়াতে পেরেছি ইনশাআল্লাহ্ আগামীতে আরো বেশি মানুষের পাশে দাড়ানোর চেস্টা করবো।তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আমাদের এই কর্মকান্ড পরিচালনা করা হয়েছে।
Leave a Reply